
২৫ মার্চ আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবস ও পাকিস্তানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি – Published by Manabkantha
আপনারা সকলেই জানেন ১৯৭১ সালের মার্চ থেকেই পাকিস্তানি সামরিক জান্তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিল নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, টঙ্গীসহ সারাদেশের লাখ লাখ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল নির্বিচারে। ২৫ মার্চ পাক সেনাদের দানবীয় রূপ দেখে এ বিশ্ব, অস্ত্রহীন ঘুমন্ত বাঙালিদের নির্বিচারে হত্যা করে পাক সেনারা।
এই অত্যাচার থেকে বাদ পড়েনি খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর এমনকি রিক্সাচালক। হামলা করা হয় মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস, পুলিশ সদর দপ্তর, এমনকি বস্তি এলাকাও বাদ পড়েনি তাদের এই নারকীয় হত্যাকাণ্ড থেকে। এই হামলার মূল লক্ষ্য ছিলো জাতিগত নিধন এবং আতঙ্ক সৃষ্টির মাধ্যমে বাংলার পরবর্তী প্রজন্মকে চিরতর পাকিস্তানের দাসে পরিণত করা। কিন্তু ৩০ লাখ শহীদ ও ২ লাখ মা-বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে পাকিস্তানকে উচিত জবাব দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি আমরা।
‘অস্ট্রেলিয়ার সিডনি মর্নিং হেরাল্ড’ পত্রিকার ভাষ্যমতে শুধুমাত্র পঁচিশে মার্চ রাতেই বাংলাদেশে প্রায় এক লক্ষ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, যা গণহত্যার ইতিহাসে এক জঘন্যতম ভয়াবহ ঘটনা। যুদ্ধ ঘোষণা ছাড়া এমনকি যুদ্ধের মধ্যে পৃথিবীর ইতিহাসে এত সংখ্যক নিরহ মানুষকে হত্যার কোনো নজির ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় না। একই রাতে পাক সেনারা ধ্বংস করে দেয় দৈনিক ইত্তেফাক, দৈনিক সংবাদ, সাপ্তাহিক গণবাংলা, দৈনিক পিপলের দপ্তর।
জঘন্যতম ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামক হত্যাযজ্ঞকে লক্ষ্য করে পাক সেনারা জীবন নেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী শিক্ষক এবং ছাত্রদের। দুইশতাধিক ছাত্র এবং ২০ জন বুদ্ধিজীবী শিক্ষককে প্রাণ দিতে হয় সে রাতে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক অধ্যাপক ড. ফজলুর রহমান খান, অধ্যাপক মনিরুজ্জামান, অধ্যাপক এম এ মুক্তাদির, ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব, অধ্যাপক এম এ আর খাদেম, ড. জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, ড. মোহাম্মদ সাদেকসহ অনেককে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।
সেই বেদনাদায়ক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বিশ্ববাসীর জানা। সকল শর্ত মতে এ ধরনের গণহত্যা একটি আন্তর্জাতিক অপরাধও বটে। তাই বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ নিয়ে গঠিত ওয়ান বাংলাদেশ ২৫ মার্চকে আন্তর্জাতিক গণহত্যা দিবসের দাবি জানাচ্ছে। সেই সাথে সারাদেশের ওয়ান বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণ পাকিস্তানকে এই হত্যাকাণ্ড স্বীকার করে রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানাচ্ছে।
লেখক : সভাপতি, ওয়ান বাংলাদেশ।
Published by Manabkantha on 24 March 2021